মানবতাবিরোধী অপরাধে পলাতক শেখ হাসিনাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ, ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞপ্তি জারি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (International Crimes Tribunal) থেকে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal)-কে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ নির্দেশনা এসেছে।

পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, হাজির না হলে চলবে অনুপস্থিত বিচার

আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির না হলে আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকার্য শুরু হবে। গতকাল সোমবারই আদালত থেকে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

মামলার পটভূমি ও অভিযোগ গঠন

গত ১ জুন এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (Chowdhury Abdullah Al-Mamun)-এর বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন আদালতে হাজির ছিলেন সাবেক আইজিপি মামুন।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম (Mohammad Tajul Islam) আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার (Abdus Sobhan Tarafdar) ও মিজানুল ইসলাম (Mizanul Islam)।

তদন্ত প্রতিবেদন ও আদেশ

গত ১২ মে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থা-র কর্মকর্তারা। সেখানে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল ২০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করা হয়েছে ২৪ জুন। মামলাটি পরিচালনা করছে তিন সদস্যবিশিষ্ট ট্রাইব্যুনাল, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার (Justice Md. Golam Mortuza Majumdar)।

প্রসঙ্গতঃ

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader)সহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতে দুই মাসের সময় দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, ওই সময় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়, যাতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। শেখ হাসিনাকে সেই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।