‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর শহীদ ও যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে সরকার অধ্যাদেশ জারি

বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকার অবশেষে ১৯৭৪ সালের ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর শহীদ ও আহত আন্দোলনকারীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ শিরোনামে প্রকাশিত এই অধ্যাদেশে শহীদদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি পুনর্বাসন, আর্থিক সহায়তা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাদেশের মূল কাঠামো

এই অধ্যাদেশে তিনটি স্তরে আহতদের শ্রেণিবিন্যাস করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য রয়েছে শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান ও সহজ শর্তে ঋণ সুবিধাসহ একাধিক সহায়তা। একই সঙ্গে জীবিত আহতদের জন্য প্রশিক্ষণ, আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ঋণ ও চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রতারণার বিরুদ্ধে কঠোর বিধান

যারা মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে নিজেদের ‘জুলাই শহীদ’ পরিবারের সদস্য বা ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা প্রাপ্ত সুবিধার দ্বিগুণ অর্থ ফেরতের বিধান রাখা হয়েছে। যদি প্রমাণ হয় যে প্রতারণাটি ইচ্ছাকৃতভাবে ও সচেতনভাবে করা হয়েছে, তবে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

ইতিহাসের দায় মেটাতে রাষ্ট্রের বার্তা

সরকার বলেছে, এই অধ্যাদেশ শুধু একটি কল্যাণমূলক আইন নয়, বরং ইতিহাসের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এ যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের সম্মান জানানো এবং আহতদের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণআন্দোলনের প্রতি সংবেদনশীলতা প্রকাশ পেয়েছে।