জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission)–এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের (Syed Abdullah Mohammad Taher)।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে বিএনপির (BNP) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)–এর সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি এ ঘটনাকে ‘ইতিহাসে বিরল’ বলে উল্লেখ করে বলেন, “এখানেই আমাদের আপত্তি ছিল। দেশের অন্য দলগুলোও কিছুটা বিব্রত।”
তাহের জানান, এই অবস্থানের কারণেই জামায়াত দ্বিতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকে অংশ নেয়নি। তবে তিনি বলেন, মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতের আমিরের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে তাদের বক্তব্য অনুধাবনের চেষ্টা করেন। এরপর জামায়াত বুধবারের আলোচনায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনোই সরকারকে ব্যর্থ করতে চাই না, বরং সহযোগিতা করতে চাই।” আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, জামায়াতে ইসলামী এনসিসি (NCC) গঠনের পক্ষে। এর মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব হবে। তবে গঠন ও কাঠামো নিয়ে দলটির কিছু ভিন্নমত রয়েছে।
তাহের বলেন, এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে না রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। একইসঙ্গে তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগও কমিটির আওতার বাইরে রাখার প্রস্তাব দেয় তারা। তবে বিষয়টি আরও আলোচনা দাবি করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার লন্ডনে (London) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস (Professor Muhammad Yunus) ও বিএনপির তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, আগামী রমজান (Ramadan) শুরুর আগের সপ্তাহে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই যৌথ বিবৃতি এবং সংবাদ সম্মেলনের পর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বলা হয়, একটি দলের সঙ্গে বিদেশে যৌথ ব্রিফিং রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় এবং এতে প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের বৈঠকে জামায়াত অংশ নেবে না বলে জানায়। কারণ হিসেবে তারা বলে, বিএনপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক ও যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে জামায়াতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। তবে পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam) সাংবাদিকদের বলেন, “জামায়াতের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে এবং আমরা মনে করছি তারা আলোচনায় অংশ নেবে।”