নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National-Citizen-Party)। নিবন্ধনের আবেদনের শেষ দিন ২২ জুন, রোববার বিকেল ৩টায় ইসি (Election-Commission) কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দলটির প্রতিনিধিদল এ আবেদন জমা দেয়।
আবেদনপত্র জমা এবং প্রতিনিধিরা
এনসিপির পক্ষে নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত ছিলেন দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী এবং যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীনসহ অসংখ্য নেতাকর্মী। আবেদনপত্র জমা দেন সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল।
নিবন্ধনের পূর্বপ্রস্তুতি
গত ১ জুন ঢাকা মহানগর উত্তর ([Dhaka-North-City]) এলাকায় সমন্বয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে এনসিপি জেলা-উপজেলায় সংগঠন গঠন শুরু করে। বুধবার পর্যন্ত ৩৩টি জেলা ও ১২৭টি উপজেলায় সমন্বয় কমিটি গঠনের দাবি করেছে তারা। এসব কমিটির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করবে এনসিপি।
ইসির শর্ত এবং এনসিপির প্রস্তুতি
নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত শর্ত অনুযায়ী—
– একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে।
– অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি থাকতে হবে।
– ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানায় অন্তত ২০০ ভোটারের তালিকা থাকতে হবে।
– দলীয় প্যাডে দরখাস্ত, গঠনতন্ত্র, নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), বিধিমালা (যদি থাকে), লোগো, পতাকার ছবি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি জমা দিতে হয়।
এনসিপির খসড়া গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দলের শীর্ষ নেতা সর্বোচ্চ তিন মেয়াদ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে পারবেন এবং প্রতি তিন বছর পরপর কাউন্সিল আয়োজন বাধ্যতামূলক।
প্রতীক পছন্দ ও অন্যান্য আবেদনকারী দল
আবেদনে এনসিপি তাদের জন্য তিনটি প্রতীক প্রস্তাব করেছে—শাপলা, মোবাইল ও কলম। এদিন নিবন্ধনের জন্য আরও কয়েকটি দল যেমন জনতার দল ([Jontotar-Dol]), জনতার পার্টি ([Jontotar-Party]), এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ([National-Democratic-Party]) আবেদন করেছে। জনতার দলের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামিম কামাল বলেন, তারা নতুন ধারার রাজনীতি করতে চায় এবং চাবি প্রতীক চেয়েছেন। জনতার পার্টির মহাসচিব শওকত মাহমুদ জানান, তারা সব শর্ত পূরণ করে আবেদন করেছেন এবং নিবন্ধন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
এনসিপির জন্ম ও পটভূমি
আওয়ামী লীগ ([Awami-League]) সরকারের পতনের পর, ২৮ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি ([National-Citizen-Committee])-র উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের জন্য ১০ মার্চ একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। প্রাথমিকভাবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও, এনসিপি ও অন্যান্য দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।