‘মব কালচারের জনক আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা’—মারুফ কামাল খানের অভিযোগ

দেশে চলমান ‘মবোক্রেসি’ বা মব কালচারকে বর্বরতা ও পৈশাচিকতা হিসেবে আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক মারুফ কামাল খান (Maruf Kamal Khan)। তিনি বলেন, এই প্রবণতা গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও সুবিচারের পরিপন্থী এবং এটি রোধে দ্রুত ও শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

মবোক্রেসি: গণতান্ত্রিক নৈরাজ্যের রূপ

তিনি বলেন, “মব কালচার একটি অসভ্য, বর্বর এবং পৈশাচিক আচরণ। এটি কোনো সভ্য সমাজে কাম্য নয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই জনতাতান্ত্রিক নৈরাজ্য বা মবোক্রেসির অবসান ঘটাতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “দেশে অধিকাংশ মানুষ মবোক্রেসির বিরুদ্ধে, কিন্তু তারা অনেকসময় হুজুগে, ক্ষোভে কিংবা প্ররোচনায় মবীয় কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।”

মবোক্রেসি চালু করে কারা?

আওয়ামী লীগ (Awami League) ও তাদের সহযোগীদের এই মব কালচারের জনক হিসেবে উল্লেখ করে মারুফ কামাল খান বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচারের নামে গণআদালত বসিয়ে এই দেশে প্রথম মবোক্রেসির উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা সচিবালয়ে হামলা, জনতার মঞ্চ ও গণকার্ফু—এসব চালিয়ে শতভাগ মবোক্রেসির বাস্তবায়ন করেছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে তারা মবোক্রেসির চরম নজির স্থাপন করে। এমনকি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের লাশবাহী গাড়িতে হামলা, জানাজায় বাধা, কবরে আক্রমণ এবং বিচারকদের বিরুদ্ধে লাঠি মিছিল পর্যন্ত করেছে তারা।”

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ও মিথ্যাচার

মারুফ কামাল বলেন, “আজ যখন তারা নিজেরাই মবোক্রেসির শিকার হচ্ছে, তখন তারা চিৎকার করছে যে দেশে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। অথচ মবোক্রেসির মূল চর্চা তারাই করেছিল।” তিনি এই ধরনের অবস্থানকে ‘মিথ্যাচার ও হিপোক্রেসি’ বলে আখ্যা দেন।

১৬ বছরের শাসন ও ফ্যাসিবাদ

লেখকের মতে, আওয়ামী লীগ ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। এর ফলে মানুষের মধ্যে ফ্যাসিবাদী মনোভাব ও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “বলপ্রয়োগে পরিবর্তনের পর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা কঠিন হলেও তা করতে হবে। কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে নিতে না পারে।”

আহ্বান

মারুফ কামাল খানের মতে, বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধস্পৃহা কখনো দীর্ঘস্থায়ী হতে দেওয়া যায় না। এখনই সময় কঠোরভাবে মবোক্রেসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এবং আইনের শাসন ও সুবিচার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার।