কুষ্টিয়া (Kushtia) সদর উপজেলার আইলচারা বাজার (Ailchara Bazar) সংলগ্ন একটি তিনতলা বাড়ি থেকে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিবাগত গভীর রাতে পরিচালিত এ অভিযানে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও ফেনসিডিল।
অপহরণ-নির্যাতনের ঘাঁটি ছিল বাড়িটি
স্থানীয়দের অভিযোগ, আটককৃতরা দীর্ঘদিন ধরে ওই ভবনটিকে একটি অপরাধের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। তারা বাড়িটিকে একটি টর্চার সেলে রূপান্তর করেছিল, যেখানে অপহরণ করে আনা ব্যক্তিদের উপর চালানো হতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। মুক্তিপণের জন্য পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের টাকা, টাকা না পেলে দেওয়া হতো খুনের হুমকি।
আটক পাঁচ সদস্যের পরিচয়
আটককৃত পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন—বাগডাঙ্গা (Bagdanga) এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ইমরান খান মানিক, বড় আইলচারা এলাকার মৃত মোজাম ডাক্তারের ছেলে রনি, মিরপুর থানা (Mirpur Thana) এলাকার পোড়াদহ ইউনিয়ন (Poradah Union)-এর দক্ষিণ কাটদহ গ্রামের সজীব, একই ইউনিয়নের চিথলিয়া (Chithlia) গ্রামের রাব্বি এবং শাকিল।
ভয় আর ত্রাসের রাজত্ব
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মানিকের নেতৃত্বে এ চক্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছিল। চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ছিল তাদের নিয়মিত কাজ। বহুবার অভিযোগ করা হলেও কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস করেনি।
এলাকাবাসীর স্বস্তি
যৌথ অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে আসে। অনেকেই বাইরে এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
পুলিশের বক্তব্য
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার (Kushtia Model Thana) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন (Mosharraf Hossain) বলেন, “আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অপহরণ সংক্রান্ত ধারায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। এই অভিযান কেবল একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পতন নয়, বরং কুষ্টিয়াবাসীর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা—অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক, আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না। স্থানীয়দের সহায়তায় ভবিষ্যতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।”