শেখ ফজলে নূর তাপস (Sheikh Fazle Noor Taposh)ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরিফ চৌধুরী (Arif Chowdhury) এখন ইশরাক হোসেন (Ishraque Hossain) নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে সহ-সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে আন্দোলনের আড়ালে নগর ভবনে আধিপত্য বিস্তার ও কর্মচারীদের ওপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। গত দুদিনে যারা আন্দোলনে অংশ নেয়নি, তাদের হেনস্তা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষ ও আহতদের অবস্থান
নগর ভবনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল (Bangladesh Jatiotabadi Sramik Dal)–এর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত মনির হোসেন (৪৫) ও মহিদুল ইসলাম (৩৫)–কে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Dhaka Medical College Hospital)।
আরিফের অতীত পরিচয় ও তাপস-সম্পর্ক
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, আরিফ চৌধুরী একসময় নিজেকে বিএনপি (BNP) নেতাদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে অফিস সহায়ক থেকে সহকারী তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতি পান। তাপসের সময়ে এক দুর্ঘটনায় ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় বরখাস্ত হলেও পরবর্তীতে আবার ফিরে আসেন।
আতঙ্কের নগর ভবন
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka South City Corporation)–এ কর্মরত অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী বর্তমানে আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ, আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আরিফ গ্রুপ ও আরিফুজ্জামান প্রিন্স (Arifuzzaman Prince) গ্রুপ একে অপরকে দোষারোপ করছে এবং নগর ভবনে দপ্তরে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে।
সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগ
সংঘর্ষের সময় বেসরকারি টেলিভিশনের রিপোর্টার মো. আসাদুজ্জামান শিশিরের মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে তার ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলা হয় বলে অভিযোগ উঠে। এমনকি তাকে হেনস্তা করা হয়।
সরেজমিন ও প্রতিক্রিয়া
সরেজমিন দেখা যায়, দুপুরে নগর ভবনের একজন কর্মীকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
আরিফুজ্জামান প্রিন্স দাবি করেন, আন্দোলনে অংশ না নেওয়া কর্মচারীদের ‘বিরোধী পক্ষ’ আখ্যা দিয়ে নগর ভবনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এবং যারা ঢুকছেন, তাদের গণপিটুনি দেওয়া হচ্ছে।
আরিফের দাবি
অন্যদিকে আরিফ চৌধুরী জানান, তার অনুসারীরা শান্তিপূর্ণভাবে নগর ভবনে অবস্থান করছিলেন, কিন্তু বহিরাগতরা এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। তিনি স্বীকার করেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে পরিবহন বিভাগের অফিস সহায়ক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন এবং ২০২৪ সালে তাপস তাকে রাজনৈতিক কারণে বরখাস্ত করেন।
ইশরাকের অভিযোগ
ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, “নগর ভবনে সেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বানচালের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের হামলায় আমাদের কর্মীরা আহত হয়েছেন।”
তিনি বলেন, “যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। জনগণের সেবায় যে বাধা দিচ্ছে, তারা আসলে নতুন বাংলাদেশের শত্রু।”