জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens’ Party)–এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (Hasnat Abdullah) কুমিল্লার দেবিদ্বার (Debidwar) উপজেলায় সরেজমিনে গিয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকার উন্নয়নকাজে অনিয়ম উদ্ঘাটন করেছেন। তিনি বলেন, আগে এক কোটি টাকার প্রকল্পে ৩০ লাখ টাকা লুট হয়ে যেত, কারণ কেউ জবাবদিহি করত না।
সরেজমিনে গিয়ে অনিয়ম ধরলেন হাসনাত
বুধবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক (Comilla-Sylhet Highway)–এর দেবিদ্বার অংশে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি অনিয়মের প্রমাণ পান। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমার ঠিকাদার এখানে কাজ করে না, আমি কোনো কমিশন খাই না, কাজেই জবাবদিহির জায়গা পরিষ্কার। এই অনিয়ম আমরা মেনে নেব না।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে রাস্তায় ডিভাইডার বসানোর কথা ছিল ৬ ইঞ্চি গাঁথনি দিয়ে, কিন্তু তা না করে শুধু পিচের ওপরেই বসানো হয়েছে। ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। রডের ব্যবহারে অনিয়ম, ব্লক না বসানো—সবই দুর্নীতির প্রমাণ।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জবাব
এই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিল মেসার্স ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজ (Messrs. Bhuiya Enterprise)। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আশিকুর রহমান ভূঁইয়া সবুজ (Ashiqur Rahman Bhuiya Sobuj) বলেন, “আমি ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী কাজ করেছি। তবে এখন বুঝতে পারছি আরও ক্ষতি হয়েছে। প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণ দিয়ে কাজ শেষ করব।”
জনগণের দুর্ভোগ এবং প্রকল্পের ত্রুটি
দেবিদ্বারের সদ্য নির্মিত সড়কটি এলাকার ফতেহাবাদ, সুবিল ও রসুলপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু নির্মাণকাজে অনিয়মের কারণে জনগণের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) এই রাস্তার কার্পেটিং হাত দিয়ে তুলে আসতে দেখে স্থানীয়রা হাসনাত আবদুল্লাহকে খবর দেন। তিনি বিকেলে ঘটনাস্থলে যান এবং কাজের গুণগত মান দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে তিনি মুরাদনগর (Muradnagar) উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকার (Sabuj Chandra Sarkar)-কে ফোনে জানালে তিনি কাজটি বন্ধ করে দেন এবং পুনরায় ঠিকভাবে করার আশ্বাস দেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিহীনতা নিয়ে সমালোচনা
হাসনাত বলেন, “সরকারি কর্মকর্তারা প্রশিক্ষিত এক্সকিউজ প্রোভাইডার। কোনো দায় স্বীকার করেন না। এই চেয়ার না, ওই চেয়ারে দোষ চাপিয়ে দেন।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা কমিশন খাই না, তারা কোনো দুর্নীতি সহ্য করব না।”