বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Begum Rokeya University)–এর শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ (Abu Sayeed) হত্যা মামলার আসামি সাবেক প্রক্টর ড. শরিফুল ইসলামকে শাস্তি থেকে বাঁচাতে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক, ছাত্রলীগ (Chhatra League) এবং কিছু সমন্বয়ক একজোট হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
চার্জশিট জমা দেওয়ার পর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিকেলে কিছু শিক্ষক এবং ছাত্রলীগ কর্মীও এই বিক্ষোভে যুক্ত হন এবং সাবেক প্রক্টরের পক্ষে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন।
মানববন্ধনে কারা ছিলেন?
উপস্থিত ছিলেন নীল দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ড. আপেল মাহমুদ, হলুদ দলের সাধারণ সম্পাদক তাবিয়ুর রহমান প্রধান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. বিজন মোহন চাকি, অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান, মো. সিদ্দিকুর রহমান, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. সানজিদ ইসলাম খান, মোহাম্মদ রফিউল আজম খান এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাহমুদুল হক। ছাত্রলীগের উপধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান আবিরসহ উপস্থিত ছিলেন সমন্বয়ক এস এম আশিকুর রহমান আশিক, রহমত আলী, নয়ন, শাহরিয়ার সোহাগ, হাজিম উল হক ও আরমান।
আবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি পোমেল বড়ুয়ার অনুসারী এবং তিনি একসময় সজীব ওয়াজেদ জয় (Sajeeb Wazed Joy)–এর হাত থেকে জয় বাংলা অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছিলেন।
তদন্ত নিয়ে উদ্বেগ
২৬ জুন ২০২৫ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৩০ জনের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করা হলেও কোনো পুলিশ সদস্যের নাম নেই। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, মূল পরিকল্পনাকারীরা দায়মুক্ত থেকে যাচ্ছেন এবং এটি বিচার প্রক্রিয়ার বিকৃতি।
তদন্ত প্রক্রিয়ায় পুলিশের ভূমিকা উপেক্ষিত হওয়ায় আন্দোলনকারীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রিফাত হোসেন রাফি বলেন, “সাবেক প্রক্টর সরাসরি দায়িত্বে থেকে দোষী, তার বিচার হতেই হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের গুলিতে শহীদ আবু সাঈদের ঘটনায় প্রক্টরের ভূমিকা রয়েছে।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তুহিন রানা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের সহায়তা ছাড়া পুলিশ এই ধরনের হামলা চালাতে পারত না। সাবেক প্রক্টরের বিচার হওয়া উচিত। তবে কোনো মব ন্যায্য হতে পারে না।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
বিএনপিপন্থি শিক্ষক ও প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, “শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডে সঠিক বিচার চাই। তবে কেউ যেন অতিরিক্ত শাস্তির শিকার না হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, “এটি আইনের বিষয়। তদন্তে প্রক্টরের সম্পৃক্ততা থাকলে তা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে স্পষ্ট হবে।”