শেখ হাসিনাকে ‘হিটলারকেও হার মানানো স্বৈরাচার’ বললেন মান্না; ছায়া সংসদে বিতর্কিত মন্তব্য

নাগরিক ঐক্য (Nagorik Oikya)র সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না (Mahmudur Rahman Manna) বলেছেন, শেখ হাসিনা ছিলেন এমন এক স্বৈরাচার, যিনি হিটলারকেও হার মানিয়েছেন।

শনিবার (২৮ জুন) ঢাকার এফডিসি (FDC) প্রাঙ্গণে আয়োজিত ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি (Debate for Democracy)র ছায়া সংসদে “ক্ষমতার পালাবদলে তরুণ ভোটারদের ভূমিকা” শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় সমালোচনা

মান্না বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ (Awami League) যে দমন-পীড়ন, হত্যা ও অত্যাচার চালিয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। তার মতে, “শেখ হাসিনা হিটলারকেও হার মানিয়েছিলেন” এবং আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতা করা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আর কখনো “সুস্থ ন্যারেটিভ” নিয়ে মানুষের সামনে আসতে পারবে না। “জুলাইয়ের চেতনা” একটি নতুন আগুন জ্বালিয়েছে, যা দীর্ঘ সময় ধরে প্রজ্বলিত থাকবে।

এনসিপি ও তরুণ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে বক্তব্য

মান্না বলেন, অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী তরুণরা দল গঠন করলেও এখনো সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। এনসিপির মধ্যেও সমন্বয়ের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। তবে তিনি আশাবাদী যে, আগামীতে সংস্কারকেন্দ্রিক জাতীয় ঐকমত্য আরও সুসংহত হবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যানের বক্তব্য

আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ (Hasan Ahmed Chowdhury Kiron)। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ ত্যাগের পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা পালিয়ে গেছেন এবং নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, জুলাই হত্যাকাণ্ড (July Killings)সহ গত ১৫ বছরে গুম, খুন, ব্যাংক লুট, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসসহ বিভিন্ন অপরাধে আওয়ামী লীগ দায়ী। তাঁর মতে, এসব কারণে আওয়ামী লীগের নির্বাচন অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারাতে পারে।

বিচারপতি খায়রুল হককে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের দাবি

হাসান কিরণ অভিযোগ করেন, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার মূল হোতা ছিলেন বিচারপতি খায়রুল হক (Justice Khairul Haque)। তিনি দাবি করেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

ছায়া সংসদের ফলাফল

অনুষ্ঠানে ‘তরুণ ভোটাররাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ইডেন মহিলা কলেজ (Eden Mohila College) বিতার্কিক দল বিজয়ী হয় এবং তারা ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি (Eastern University)কে পরাজিত করে।

বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক কাজী জেবেল, সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন এবং সাংবাদিক সাইদুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।