বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Begum Rokeya University) এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এর সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান (Tabiur Rahman Pradhan)-এর ২০১২ সালের প্রভাষক পদে নিয়োগে ‘জালিয়াতি’ হয়েছে এমন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উচ্চপর্যায়ের তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন

হাইকোর্ট (High Court) এর আদেশ এবং দুদক (ACC) এর চিঠির ভিত্তিতে গত শনিবার (২৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৩তম সিন্ডিকেট সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী (Prof. Dr. Md. Shaukat Ali)।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka) এর মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম শাহিদুল ইসলাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (University of Rajshahi) এর ফলিত গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শামসুল আলম সরকার
– বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদ

নিয়োগ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক

তাবিউর রহমান প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ২০১২ সালে নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশপত্র জাল করে প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। প্রকৃতভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী ছিলেন মো. মাহামুদুল হক (Mahmudul Haque)। নিয়োগপত্রে কাটাছেঁড়া করে তাবিউরের নাম কলমে বসানো হয় বলেও জানা যায়।

রাজনীতির প্রভাব এবং অভিযোগ

আওয়ামী লীগ (Awami League) সমর্থক হিসেবে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি একাধিকবার। লালমনিরহাট-১ (Lalmonirhat-1) ও লালমনিরহাট-২ (Lalmonirhat-2) আসনের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণাও করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি ১৩ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছেন।

নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীর ক্ষোভ

মাহামুদুল হক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় জানে তাবিউরের চাকরি অবৈধ, তারপরও কেন তাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে না? একজন অবৈধভাবে কীভাবে ১৩ বছর ধরে শিক্ষকতা করেন?” তিনি আরও বলেন, “এই দায় সকল ভিসিকে নিতে হবে। তাকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকেও সরাতে হবে।”

তদন্ত কমিটির বক্তব্য

রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, “তদন্ত কমিটি আগে থেকেই ছিল, তবে সিন্ডিকেট সদস্যদের পরিবর্তনের কারণে নতুন করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউজিসি (UGC) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবগত করার পরপরই নতুন কমিটি হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সত্যতা প্রকাশ পাবে।”