বিএনপি (BNP)–র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (Mirza Abbas) অভিযোগ করেছেন, একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন পেছাতে চাইছে, যা জাতির জন্য সর্বনাশ ডেকে আনবে। রোববার রাজধানীর কাকরাইল (Kakrail)–এ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (Institute of Diploma Engineers) মিলনায়তনে রমনা থানা বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচন পিছানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
মির্জা আব্বাস বলেন, “একেকজন একেক দাবি তুলে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চাইছে, যা জাতির জন্য বিপজ্জনক। বড় বড় সমাবেশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সমাবেশ দিয়ে জনপ্রিয়তা প্রমাণের চেষ্টা অনর্থক।” তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “আমরা চাইলে সারা দেশে একদিনেই সমাবেশ করতে পারি, কেউ জায়গা পাবে না।”
বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও রাজনৈতিক কৌশল
তিনি রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, “সবাইকে অনুরোধ জানাব, আউল-ফাউল কথা বলা বন্ধ করুন। এসব বিভ্রান্তিকর কথা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করা চলবে না।”
ইসলামী আন্দোলন (Islami Andolon)–এর আমির সৈয়দ রেজাউল করীম (Syed Rezaul Karim)–কে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের ওপর দমন-পীড়ন চলাকালে উনি শুধু বাহবা দিয়েছেন, কোনো প্রতিবাদ করেননি। এখন পিআর সিস্টেম ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি করছেন—এটা কোন বুদ্ধি? কারা আপনাদের এসব উপদেশ দিচ্ছে?”
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে উদাহরণ
ইরান-ইসরাইল সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ইরান একা যুদ্ধ করেছে কারণ জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল। অথচ আমাদের দেশে রাজনৈতিক বিভক্তির কারণে দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে।”
দলীয় অভ্যন্তরীণ সতর্কতা
তিনি জানান, বিএনপির সুনাম নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র চলছে। কিছু মহল অপবাদ ও চক্রান্ত ছড়িয়ে জনগণের কাছে দলকে হেয় করছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমার নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদাবাজি করলে তাকে ধরে পুলিশে দিন। আমি স্পষ্ট করে বলছি—আমার কোনো ভাই, আত্মীয় কিংবা সহকর্মী চাঁদাবাজ নয়।”
দলের মধ্যে হালুয়া-রুটির ভাগ নিতেই অনেকেই ঢুকছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চাঁদাবাজ হলে সে যতই বিএনপির হোক, ছাড় দেওয়া যাবে না।”
সদস্য সংগ্রহে সতর্কতা
নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, “খারাপ লোককে সদস্য করা যাবে না। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। আমার গোয়াল খালি থাকলেও চলবে, কিন্তু দুষ্টু লোক নয়।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ (Abdus Salam Azad), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন (Tanvir Ahmed Robin) এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেন সরদার (Mokbul Hossain Sardar)।