আবু সাঈদ (Abu Sayeed) হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Begum Rokeya University) সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ (Hasibur Rashid) ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (Rangpur Metropolitan Police) সাবেক কমিশনার মনিরুজ্জামান (Moniruzzaman)সহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপিত ভিডিও ও অভিযোগ
সোমবার (৩০ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ (International Crimes Tribunal-2)–এ আবু সাঈদ হত্যার একটি ভিডিও উপস্থাপন করা হয়। এরপর চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম (Tajul Islam) আদালতে ৩০ জন আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে শোনান।
আলোচনা শেষে আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার বাকি চারজন আসামি ইতোমধ্যে কারাগারে রয়েছেন।
কারাগারে থাকা চার আসামি
যারা এরই মধ্যে কারাগারে রয়েছেন তারা হলেন:
– পুলিশ সদস্য আমির হোসেন (Amir Hossain) – যিনি আবু সাঈদকে গুলি করার অভিযোগে অভিযুক্ত।
– কনস্টেবল সুজন চন্দ্র (Sujon Chandra)
– বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম (Shariful Islam)
– ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী (Imran Chowdhury)
গণ-আন্দোলনের সূচনা
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ঘটনার সময় নিরস্ত্র আবু সাঈদ দু’হাত প্রসারিত করে দাঁড়ানো অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন। সেই দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
শুরু হয় গণবিক্ষোভ ও ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, যা পরিণত হয় এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানে।
সরকারের পতন ও ঐতিহাসিক প্রভাব
এই আন্দোলনের চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ভারত পালিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং পতন ঘটে তাঁর ১৬ বছরের শাসনের।
আবু সাঈদ হয়ে ওঠেন সেই গণ-আন্দোলনের প্রথম শহীদ। তাঁর আত্মত্যাগ আজও গণতন্ত্র ও ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে।