আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলাদেশে আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)। সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (Marco Rubio)র সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তিনি। উভয় নেতা নির্বাচন, বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও ভূরাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেন।

সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে একমত

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং (Press Wing) থেকে জানানো হয়, মার্কো রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি ও আসন্ন নির্বাচনের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য এবং রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস। উভয় পক্ষ শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতি এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণে আশাবাদ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam) জানান, দুই নেতার মধ্যে ১৫ মিনিটের ফোনালাপ ছিল অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ, বন্ধুসুলভ ও গঠনমূলক। আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।

গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও তরুণদের উৎসাহের বার্তা

ড. ইউনূস বলেন, “আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপ কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক সংস্কারে সহায়ক হবে। নির্বাচন কমিশন পুরনো ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যবস্থাকে পুনর্গঠনে নিরলস কাজ করছে।” তিনি উল্লেখ করেন, এই নির্বাচনেই বহু তরুণ প্রথমবারের মতো ভোট দেবে।

তিনি মার্কো রুবিওকে নির্বাচনপূর্ব বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রত্যক্ষ করতে পারেন। “এমন সফর আমাদের তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

রোহিঙ্গা সংকট ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার

আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুতেও গুরুত্বারোপ করা হয়। ড. ইউনূস জানান, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র মানবিক সহায়তার সবচেয়ে বড় দাতা। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা বর্তমানে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে উজ্জ্বল বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াশিংটনে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে সফল বৈঠক করেছেন এবং পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ৯০ দিনের জন্য শুল্ক ব্যবস্থা স্থগিত রাখতে সম্মত হওয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)কে ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস (Tammy Bruce) জানান, ফোনালাপে দুই দেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতা, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক এবং ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফোনালাপের বিস্তারিত পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।