ক্রসফায়ার থেকে বেঁচে ফেরা জামায়াত নেতা আলী আছগর এবার পাবনা-৩ আসনে এমপি প্রার্থী

ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে ক্রসফায়ার থেকে ফিরে আসা জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) নেতা অধ্যাপক মাওলানা আলী আছগর (Ali Asgor) আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৩ (Pabna-3) আসন থেকে দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এলাকায় তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে সক্রিয় প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

রাজনীতিতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা

আলী আছগর বর্তমানে পাবনা (Pabna) জেলা জামায়াতের সহকারী তরবিয়ত সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং শরৎনগর ফাজিল মাদ্রাসায় আরবি বিষয়ের অধ্যাপক। ১৯৮৫ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন, পরে বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি হন। ২০০০ সালে ভাঙ্গুড়া উপজেলা জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন।

জুলুম-নির্যাতনের ইতিহাস

তার বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী সরকারের সময় ৯টি মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দায়ের হয় এবং তাকে সাতবার কারাবরণ করতে হয়। প্রায় দুই বছর জেলজীবন কাটান তিনি। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার করে জেলগেট থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এরপর সাতদিন পাবনা শহরের আয়নাঘর নামক গোপন স্থানে আটকে রাখা হয় এবং পরে পদ্মার চরে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে ক্রসফায়ারে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

ভয়াবহ অভিজ্ঞতা

আলী আছগর জানান, আয়নাঘরে তার হাত পেছন থেকে বাঁধা ছিল এবং ডান্ডাবেরি পরানো হতো। অজু, গোসল বা স্বাভাবিক খাবারের সুযোগ দেওয়া হতো না। তিনি তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করতেন।

সর্বশেষ রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে সাদা মাইক্রোবাসে করে পদ্মার চরে নেয়া হয়। পুলিশ সদস্যরা কাটা বন্দুকসহ অবস্থান করছিলেন এবং তাকে গুলি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি শাহাদাতের প্রস্তুতি নিয়ে শেষ মুহূর্তে দোয়া-দরুদ পড়ছিলেন।

হঠাৎ দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা ফোনে কারও সঙ্গে দীর্ঘসময় কথা বলার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তাকে আবার আয়নাঘরে ফিরিয়ে নেয়। পরদিন তাকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

দলের প্রতিক্রিয়া

উপজেলা জামায়াত আমির মাওলানা মহির উদ্দিন বলেন, আলী আছগর একজন মজলুম আলেম যিনি শুধু দ্বীনি আন্দোলনের কারণে জুলুমের শিকার হয়েছেন। তাকে হত্যাচেষ্টা ছিল জঘন্য অপরাধ এবং যারা জড়িত তাদের বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।