ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর মূল কারণ রাজস্ব আদায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখা—এমনটাই জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন (Commerce Adviser Sheikh Bashir Uddin)। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভা শেষে তিনি এসব তথ্য জানান।
নতুন দামের তালিকা
সভা শেষে শেখ বশির উদ্দীন জানান, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ৯২২ টাকায় বিক্রি হবে। একই সঙ্গে প্রতি লিটার খোলা পাম তেলের দামও নির্ধারিত হয়েছে ১৬৯ টাকা। নতুন এই দাম ১৫ এপ্রিল থেকেই কার্যকর হবে।
তিনি জানান, এই মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (Bangladesh Trade and Tariff Commission) নির্ধারিত নিয়ম এবং আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী হয়েছে।
সাময়িক কষ্ট, ভবিষ্যতে দাম কমার সম্ভাবনা
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “তেলের দাম বাড়ায় ভোক্তারা সাময়িক কষ্টে পড়বেন, তবে আমরা বাজারে আরও ব্যবসায়ী যুক্ত করছি। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দাম কমতেও পারে।” তিনি আরও বলেন, স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দুটি তেল কোম্পানি উৎপাদন শুরু করেছে এবং আরও ৬-৭টি কোম্পানি প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
মিল মালিকদের প্রস্তাব ও দরকষাকষির পটভূমি
জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ ঈদের আগে মিল মালিকরা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। তখন তারা বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৮ টাকা এবং খোলা তেলের দাম ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (Ministry of Commerce) এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন-কে তারা লিখিতভাবে জানায়।
মূল্যবৃদ্ধির এই প্রক্রিয়া শুরু হয় এমন সময়ে, যখন গত রমজানের আগে ভোজ্যতেলে শুল্ক-কর ছাড় দিয়েছিল সরকার, যার মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ মার্চ। এরপর দফায় দফায় আলোচনার মাধ্যমে আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় সরকার।
এনবিআরকে শুল্ক ছাড় বাড়ানোর সুপারিশ
এদিকে, ব্যবসায়ীদের দাবির আগেই আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর ছাড়ের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (National Board of Revenue – NBR)-কে চিঠি দেয়। তবে এনবিআর এখনো এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি।