বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) (BIDA) ও বাংলাদেশ পুলিশ (Bangladesh Police) যৌথভাবে একটি জরুরি যোগাযোগ হটলাইন চালুর ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম (Baharul Alam) এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন (Chowdhury Ashiq Mahmud Bin Harun) এক বৈঠকে এই উদ্যোগের ঘোষণা দেন।
ভাঙচুরের ঘটনার পর উদ্যোগ
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাম্প্রতিক সময় গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনের সময় ভাঙচুরের শিকার হওয়া ছয়টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— নেসলে বাংলাদেশ, কোকাকোলা বাংলাদেশ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, বাটা, রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ, পেপসিকো, এবং জুবিলেন্ট ফুড ওয়ার্কস বাংলাদেশ।
৭ ও ৮ এপ্রিল এসব প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পুলিশের তথ্যমতে, এ ঘটনায় ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার ও এক ডজন মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হটলাইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি বিশেষ হটলাইন চালু করা হবে, যেখানে তারা নিরাপত্তাজনিত যেকোনো ঘটনা তাৎক্ষণিক জানাতে পারবেন এবং দ্রুত সহায়তা পাবেন।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “আমরা কেবল প্রতিক্রিয়া জানাতে আসিনি, বরং স্থায়ী আস্থা গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বিডার অবস্থান
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বৈঠকে বলেন, “এই বৈঠক প্রতীকী কোনো পদক্ষেপ নয়, বরং এটি বাংলাদেশ সরকারের বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকার অঙ্গীকারের দৃঢ় প্রকাশ। যারা হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করি, তবে সহিংসতার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব নয়।”
নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর নির্বাহীরা ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে নতুন নিরাপত্তা প্রটোকল, র্যাপিড রেসপন্স ইউনিট এবং সংকট-যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হবে।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “এই উদ্যোগ প্রতিক্রিয়ার নয়, বরং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার একটি পথচলা।”
ভবিষ্যৎ বিনিয়োগে আস্থা
প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা সরকারের তাৎক্ষণিক সাড়া ও দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এই উদ্যোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের (Interim Government) অধীনে বিডার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য—বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ, টেকসই ও বিনিয়োগবান্ধব গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।