তিন বেলা তিন দেশে খাবার খেয়েছেন গলফার সিদ্দিকুর: ভ্রমণ, পরিবার ও ক্যারিয়ারের গল্প

গলফার সিদ্দিকুর রহমান ([Siddikur Rahman])—বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের এক ব্যতিক্রমধর্মী নাম, যিনি বলবয় থেকে উঠে এসেছেন আন্তর্জাতিক গলফে। প্রায় ৪০টিরও বেশি দেশে ৩২০টির বেশি টুর্নামেন্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। একসময় এমনও হয়েছিল—নাশতা করেছেন ঢাকা ([Dhaka])য়, লাঞ্চ করেছেন দোহায় এবং ডিনার করেছেন মায়ামি ([Miami])তে!

প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিদ্দিকুর তুলে ধরেছেন তাঁর জীবনের নানা দিক। বর্তমানে টুর্নামেন্ট কম খেললেও মেয়েকে সময় দেওয়া, দেশি-বিদেশি ভ্রমণ এবং পরিবার নিয়ে সময় কাটানোতেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন তিনি।

সিদ্দিকুর জানান, গলফ খেলতে গিয়ে ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপসহ ৪০টিরও বেশি দেশে গেছেন বহুবার। ভ্রমণের সময় তিনি সবসময় নিজের খেলার বিশ্লেষণ রাখেন একটি নোটবুকে। সবচেয়ে বেশি পছন্দের দেশ হিসেবে তিনি আলাদা করে জাপানের কথা উল্লেখ করেন।

প্রথমবার বিমানে চড়েছিলেন পাকিস্তান সফরে, তখন বয়স ছিল মাত্র ১৫। এখন ১৫টি পাসপোর্ট বই হয়ে গেছে তাঁর! ভারতে এক টুর্নামেন্টে জয়ী হয়ে পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩০ হাজার ডলার, যার মধ্যে ২৬% ট্যাক্স কেটে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, আয় থাকলেও খরচও অনেক বেশি। একটি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ক্যাডি, হোটেল, টিকিট, ভিসা, কোচিং, ফিজিওথেরাপি সব কিছু মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ৭০%।

প্রিয় গলফ কোর্সের মধ্যে তাঁর সবচেয়ে পছন্দ দিল্লি গলফ ক্লাব, যেখানে তিনি সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছেন। ফাইভ স্টার হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন তিনি, তবে বলেছেন যে, রুম শেয়ার করতে পারেন না।

গলফের পাশাপাশি শৈশবের স্মৃতিও ভুলেননি সিদ্দিকুর। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লিচুগাছ থেকে পড়ে গিয়ে ২–৩ দিন অজ্ঞান থাকার অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে মাছ ধরা, ফল পেড়ে খাওয়ার গল্পগুলোও উঠে এসেছে তাঁর কথায়।

গানের দিকেও আগ্রহ রয়েছে তাঁর। মোশাররফ করিমের নাটকেরও তিনি একজন বড় ভক্ত। রুটিন জীবন পছন্দ করেন, খুব সকালে ওঠেন এবং ইংরেজি শব্দ চর্চা করেন নিয়মিত।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি গলফ কিংবদন্তি টাইগার উডস, মারিয়া শারাপোভা ও উসাইন বোল্টের মতো তারকাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন।

সিদ্দিকুর রহমানের জীবনের এই অংশটুকু তাঁর ভক্তদের জন্য এক অনুপ্রেরণামূলক গল্প—বলবয় থেকে হয়ে ওঠা একজন বিশ্বজয়ী গলফার।