সাবেক মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী মোজাম্মেলসহ ২২ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভুয়া হতে পারে: যাচাইয়ে জামুকা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক (A K M Mozammel Haque)-এর বিরুদ্ধে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ সনদ ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তিনি নন, সাবেক মন্ত্রী, সচিব, বিচারপতি ও সংসদ সদস্যসহ ২২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই তালিকাটি যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জামুকা (JAMUKA)। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও গেজেট বাতিল করা হবে।

যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত

গত ১৩ এপ্রিল জামুকা চেয়ারম্যান ফারুক-ই-আজম (Farook-e-Azam)-এর সভাপতিত্বে ৯৫তম সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী (Israt Chowdhury) জানান, “ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে নির্ধারিত ফরম ও সরাসরি অভিযোগের ভিত্তিতে যাচাই চলছে। জামুকার সাম্প্রতিক সভায় অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রাথমিকভাবে ২২ জনের নথিপত্র যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:
– সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, শ ম রেজাউল করিম, আব্দুল মতিন খসরু, ফারুক খান, টিপু মুনশি, মোজাম্মেল হোসেন
– সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলন, মীর শওকত আলী বাদশা
– বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক
– সাবেক আইজিপি আবদুর রহিম খান, সেনা কর্মকর্তা মোল্লা ফজলে আকবর, জাহাঙ্গীর কবির, আনারুল ইসলাম
– সচিব খোন্দকার শওকত হোসেন, তড়িৎ কান্তি রায়, গোপালগঞ্জের তরুণ কান্তি বালা
– কর কমিশনার ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম, শাহ সালাউদ্দিন, শফিকুল বাহার মজুমদার, সালেহ উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুস সোবহান খান

বিতর্কের শুরুর পেছনে

১৯৯৬ সালে গেজেটে মোজাম্মেল হকের নাম অন্তর্ভুক্ত হলে বিতর্ক শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালে খ ম আমীর আলী (K M Amir Ali) রিট করেন (মামলা নম্বর: ১৫১৪২)। তদন্তে দেখা যায়, ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৫১ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় মোজাম্মেল হকের নাম নেই। অভিযোগ রয়েছে, ১৯৮৬ সালের “লাল মুক্তিবার্তা”র ভলিউমে ঘষামাজা করে তার নাম ঢুকানো হয়েছে।