নির্বাচন অনিশ্চিত, নিষেধাজ্ঞার মুখে আওয়ামী লীগকে ফেরাতে সক্রিয় পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দা সংস্থা

আওয়ামী লীগের (Awami League) রাজনীতির ওপর কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এক অনিশ্চয়তায় পড়েছে। বিশিষ্টজনরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞা শুধু একটি দলের ওপর নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। এ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বিদেশি গোয়েন্দা তৎপরতার ইঙ্গিতও মিলেছে, যা আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরানোর উদ্দেশ্যে কাজ করছে।

বিশ্লেষকদের অভিমত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Dhaka) সাবেক উপাচার্য ও রাষ্ট্রদূত ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী (Dr. Anwarullah Chowdhury) বলেন, দলটির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, তার দায় স্বীকার ও জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। তিনি উল্লেখ করেন, “জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি দিয়ে আওয়ামী লীগ টিকবে না। সরকারেও তাদের লোক আছে, আবার পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দারাও দলটির জন্য সক্রিয়। তবে জনগণের ওপরে কেউ নয়। নতুন করে ফিরে আসতে হলে দলটিকে নিজের অবস্থান পাল্টাতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, সরকার আইন করে অনেক আগেই নিষেধাজ্ঞা দিতে পারত, কিন্তু এখন সেটা চাপের মুখে হয়েছে। ফলে এর ফলাফলও অনিশ্চিত।

ছাত্র-জনতা ও গণআন্দোলনের ভূমিকা

বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী (Dr. Dilara Chowdhury) মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা থেকে সরে যাওয়া ছাত্র-জনতার চাপের ফল। তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতার দাবি এখানেই শেষ হবে না। তারা গণপরিষদ গঠন, নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও সেকেন্ড রিপাবলিকের দাবি তুলবে।”

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রক্তপাতও হতে পারে, আবার সমঝোতাও। বিদেশিরাও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রাজনৈতিক সমঝোতা, যা দেশকে স্থিতিশীল করতে পারে।”

রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ

রাজনীতি বিশ্লেষক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ (Dr. Nazmul Ahsan Kalimullah) বলেন, আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো পথ নেই। তিনি বলেন, “আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে, চোরাগোপ্তা হামলা করে কিংবা গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দলটি নিজের অস্তিত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এখন কোনো দলই নতুন প্রজন্মকে বাদ দিয়ে রাজনীতি করতে পারবে না।”

ড. কলিমুল্লাহ আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের একটি ভোটব্যাংক আছে। এর একটি অংশ নিষ্ক্রিয় হবে, কেউ অন্য দলে যাবে, কেউ রাজপথে থাকবে। তবে কেউই শেষ পর্যন্ত সফল হবে না।”

নির্বাচন অনিশ্চয়তায়

ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, “বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ছাত্র-জনতার চাপের কারণে আসন্ন নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।” ফলে আগামী দিনের রাজনীতি কোন পথে এগোবে, তা এখনও অস্পষ্ট।