বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (Sheikh Mujibur Rahman), সৈয়দ নজরুল ইসলাম (Syed Nazrul Islam), তাজউদ্দীন আহমদ (Tajuddin Ahmad)সহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদ (MNA/MPA)–এর বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বহাল রেখে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন (জামুকা) এর সংশোধিত খসড়া আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হচ্ছে।
পরিবর্তিত সংজ্ঞা: প্রবাসী সরকার ও অন্যান্য শ্রেণিকে যুক্ত রাখা
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় (Ministry of Liberation War Affairs) সূত্র জানায়, আগে প্রস্তাবিত খসড়ায় মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকার ও অন্যান্য চার শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধাকে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে উপদেষ্টা পরিষদের নির্দেশনার পর সেই সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে মুজিবনগর সরকার (Mujibnagar Government) এবং বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করা পেশাজীবী, শিল্পী, সাংবাদিক ও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল (Swadhin Bangla Football Team)–সহ সবাইকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা
খসড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “যারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছেন, প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করেছেন, তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।” এতে রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) এবং শান্তি কমিটিকে বিরোধী শক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩৬ শ্রেণির তালিকা, যাচাই হবে নতুনভাবে
বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৩৬টি শ্রেণি রয়েছে। সংশোধিত খসড়া অনুমোদন পেলে বেসামরিক গেজেটভুক্তদের মধ্য থেকে যাঁরা সরাসরি রণাঙ্গনে অংশ নেননি, তাদের যাচাই-বাছাই করবে মন্ত্রণালয়।
সিদ্ধান্তের পেছনে প্রক্রিয়া ও নেতৃত্ব
এই খসড়া আইন সংশোধনের বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে জামুকার (JAMUKA) ৯৪তম সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১০ মার্চ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (Faruk-E-Azam) সংশ্লিষ্ট কার্যপত্র অনুমোদন করেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী (Israt Chowdhury) গণমাধ্যমকে জানান, নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী প্রবাসী সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বহাল থাকবেন এবং আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদে এটি অনুমোদনের জন্য তোলা হবে।