জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National-Citizens-Party) নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁও (Agargaon) এলাকায় নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বুধবার (২১ মে) দুপুর পৌনে ১২টায় এ কর্মসূচি শুরু হয়।
পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নির্বাচন কমিশন (Election-Commission) ঘিরে নেওয়া হয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সকাল থেকেই ভবনের সামনে কাঁটাতারের ব্যারিকেড বসানো হয়। সেখানে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ (Police), কোস্ট গার্ড, বিজিবি (BGB), র্যাব (RAB) এবং সেনা সদস্যরা।
এনসিপির নেতাদের বক্তব্য
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন এনসিপির কলাবাগান থানার প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ।
দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম মঙ্গলবার রাতে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। তার মতে, কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয় এবং দ্রুত পুনর্গঠন প্রয়োজন। তিনি জানান, ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতিকে পরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচনের দিকে নেওয়া হয়েছে এবং জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এখন অত্যন্ত জরুরি এবং এতে রাজনৈতিক সংকট নিরসন হবে। সেইসঙ্গে তিনি গণপরিষদ (Constituent-Assembly) ও জাতীয় নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ ঘোষণার দাবিও জানান।
ঢাকা উত্তরের প্রশাসক প্রসঙ্গে বক্তব্য
তিনি স্পষ্ট করেন, ঢাকা উত্তর (Dhaka-North) সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল টেন্ডার না পেয়ে অভিযোগ তুলছে এবং বিষয়টি তদন্ত করা উচিত।
অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মত
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে তারা মাঠে নেমেছেন। সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এই কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka-South-City-Corporation) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য কমিশনের ভূমিকা দায়ী।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস‘ মামলায় নির্বাচন কমিশন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, যার ফলে একতরফা রায় দেওয়া হয়। এছাড়া মামলার রায় ঘোষণার আগেই প্রশাসক নিয়োগ ও গেজেট প্রকাশে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ছিল পক্ষপাতমূলক।
কমিশন গঠনে বিতর্ক
আখতার আরও বলেন, বর্তমান কমিশন ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী গঠিত, যা ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলো প্রত্যাখ্যান করেছিল। তিনি অভিযোগ করেন, কমিশন নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের আগে গঠিত হওয়ায় তার কার্যক্রমে সেসব প্রস্তাবনার প্রতিফলন ঘটবে না।
তিনি আরও বলেন, পলাতক ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে যে প্রস্তাব ছিল, তাও বর্তমান নির্বাচন কমিশন নাকচ করেছে। ফলে কমিশনের ওপর আস্থা রাখা অসম্ভব বলে দাবি করেন তিনি।