জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (National Security Adviser) খলিলুর রহমান (Khalilur Rahman) সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাখাইন কেন্দ্রিক করিডোর ইস্যুতে বাংলাদেশের কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি এবং ভবিষ্যতেও কোনো আলোচনা হবে না। তিনি বলেন, “দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই—করিডোর বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কারও কোনো কথা হয়নি, হবেও না।”
করিডোর নয়, মানবিক চ্যানেল প্রশ্নে জাতিসংঘের ওপর দায়িত্ব
বুধবার (২১ মে) দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোড (Bailey Road) এর ফরেন সার্ভিস একাডেমি (Foreign Service Academy) তে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। রাখাইন অঞ্চল ঘিরে একটি মানবিক করিডোর গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে চলমান আলোচনার প্রেক্ষাপটে তিনি এই বক্তব্য দেন।
খলিলুর রহমান বলেন, “মানবিক চ্যানেল তৈরি হবে কি না, সেটা বাংলাদেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র (United States) বা চীন (China)—কারও কোনো চাপ বাংলাদেশের ওপর নেই। যদি মানবিক চ্যানেল গঠিত হয়, তার সম্পূর্ণ দায়ভার জাতিসংঘ (United Nations) গ্রহণ করবে, বাংলাদেশ সীমান্তে কেবল নিরাপত্তা দেবে।”
রাখাইনের পরিস্থিতি ও আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ
তিনি বলেন, করিডোর একটি বিপর্যয়কালীন এলাকায় মানুষ সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া। কিন্তু বাংলাদেশে কাউকে সরানো হচ্ছে না। রাখাইন রাজ্যের ৯০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে আরাকান আর্মি (Arakan Army) দখলে রেখেছে বলে জানান তিনি। সে কারণে সেখানে সমান্তরালভাবে আরাকান আর্মির সঙ্গেও যোগাযোগ হচ্ছে। তারা নীতিগতভাবে রোহিঙ্গা (Rohingya) প্রত্যাবাসনে একমত হয়েছে।
তবে তিনি বলেন, “যত দিন আরাকানের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকবে, ততদিন প্রত্যাবাসনের আলোচনা সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আরাকান আর্মিকে সরাসরি বলে দিয়েছি—কোনো ধরনের জাতিগত নিধন আমরা মেনে নেব না।”
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যু এবং ব্যক্তিগত নাগরিকত্ব বিষয়ে বক্তব্য
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে ওঠা প্রশ্নে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ছাড়া আমার আর কোনো নাগরিকত্ব নেই। আমি পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থেকেছি, তবে কোনো মার্কিন পাসপোর্ট আমার নেই।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বিদেশে থাকলেই যদি নাগরিকত্ব হয়, তাহলে বিএনপি (BNP) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) নিয়েও তো এ ধরনের প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। তাই এ বিষয়ে ভিত্তিহীন বক্তব্য না দেওয়াই ভালো।”