দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই এবি পার্টি (AB Party)–র সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফুয়াদ (Barrister Fuad) দ্বৈত নাগরিকদের বিরুদ্ধে চলমান প্রচারণাকে একপাক্ষিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। একটি টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান (Dr. Khalilur Rahman)–এর নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক উঠেছে, কিন্তু বিগত ১৬ বছরে যারা সাড়ে ছয় হাজার মানুষকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে, তারা কোন দেশের পাসপোর্টধারী ছিলো?”
“খলিলুর রহমান গণতন্ত্রের জন্য নিবেদিত প্রাণ”
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “তিনি (খলিলুর রহমান) আমেরিকান নাগরিক নন, তিনি কেবল গ্রিন কার্ডধারী। আমি তাকে বহু বছর ধরে চিনি। তিনি দেশ, ভোট এবং গণতন্ত্রের ভাবমূর্তি রক্ষায় আন্তরিক। তাহলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে?”
“২০ বিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ তো সবুজ পাসপোর্টধারীদের বিরুদ্ধেই”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যাদের বিরুদ্ধে প্রতিবছর ২০ বিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ, তারা কি সবুজ পাসপোর্টধারী নয়?” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “যখন আলী রিয়াজ (Ali Riaz), বদরুল আলম মজুমদার (Badruzzaman Mazumdar) দেশের জন্য নির্বাচন সংস্কারে কাজ করেন, তখন তাদের পাসপোর্ট নিয়ে বিতর্ক তোলা হয়, অথচ তারা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের জন্য নিবেদিত আছেন।”
“রেমিটেন্স পাঠালে সম্মান, দায়িত্ব নিলে বিতর্ক?”
ফুয়াদ বলেন, “বিদেশে বসবাসকারী যারা রেমিটেন্স পাঠান, মসজিদ-মন্দির বানান, তখন তো কেউ দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে না। কিন্তু রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিতে গেলে কেন সমস্যা হয়?”
তিনি দাবি করেন, ভারতের মিডিয়ায় খলিলুর রহমান এবং আলী রিয়াজকে কেন্দ্র করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে যেন তারা কোনো ষড়যন্ত্রে যুক্ত। “বাস্তবতা তা নয়,” বলেন তিনি।
শেখ হাসিনার পরিবারের দ্বৈত নাগরিকত্বও প্রশ্নের বাইরে?
ব্যারিস্টার ফুয়াদ স্মরণ করিয়ে দেন, “শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা, এমনকি শেখ মুজিবুর রহমান (Sheikh Mujibur Rahman)–এর প্রাক্তন দেহরক্ষীদের জন্যও বিশেষ আইন রয়েছে। “জয়, পুতুলদের রাষ্ট্রীয় প্রটোকল দেওয়া হয়, তখন তো কেউ দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে না,”—বলেন ফুয়াদ।
“পাসপোর্টের রঙ দিয়ে দেশপ্রেম বিচার করা যায় না”
ফুয়াদ বলেন, “একটা কাগজের রঙ দিয়ে দেশপ্রেম মাপা যায় না। আপনি কার কাজ দেখেন, তার অবদান দেখেন—পাসপোর্ট দিয়ে নয়।”
তিনি আরও বলেন, “যদি আইন দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে, তাহলে সংসদ সদস্য হতে না পারার আইনটিও পুনর্বিবেচনা করা উচিত।” তার মতে, দেশের ভেতরে ও বাইরে সব বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রীয় কাজে যুক্ত করার পথ তৈরি করাই হবে বাস্তববাদী সিদ্ধান্ত।