নুরের দাবিকে ‘ভৌতিক’ বলছে বিএনপি, পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত গলাচিপা-দশমিনা

গণঅধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad)–এর সভাপতি ও ডাকসুর (DUCSU) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur)–এর দাবির প্রেক্ষিতে শুরু হওয়া উত্তেজনা এখন কেন্দ্র করে রয়েছে পটুয়াখালী-৩ আসনের গলাচিপা (Galachipa) ও দশমিনা (Dashmina) এলাকায়। ঘটনাপ্রবাহে একদিকে চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসন ৪৮ ঘণ্টার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

নুরের অভিযোগ

নুরুল হক নুর বৃহস্পতিবার রাতে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, “আমরা বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছি, অথচ তাদের নেতারা আমাদের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করেন এবং হামলা চালান।”

তিনি আরও বলেন, “ঘটনার মূল হোতা হাসান মামুন (Hasan Mamun) বিএনপির নাম ব্যবহার করে আওয়ামী স্টাইলে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছেন।”

বিএনপি নেতাদের প্রতিক্রিয়া

দশমিনা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাওলাদার ইফতিয়াস উদ্দিন জয় বলেন, “নুরের অবরুদ্ধ ও মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভৌতিক।” তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, “নুরের লোকজনই বিএনপি অফিসে হামলা করেছে। সে নিজেকে কেন্দ্র করে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করছে।”

তিনি আরও বলেন, “নুর একজন শিষ্টাচারবহির্ভূত রাজনীতিক, ঢাকায় বসে আওয়ামী বিরোধিতা করে আর এলাকায় গিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে। আমরা তাকে দশমিনা-গলাচিপায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।”

হাসান মামুনের বক্তব্য

বিএনপি (BNP) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন জানান, “নুরের আপত্তিকর মন্তব্যে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের বিএনপি সভাপতির সঙ্গে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। তার ধারাবাহিকতায় তার পরিবার ও স্থানীয় আওয়ামী-গণঅধিকার কর্মীরা বিএনপি অফিসে হামলা চালায়।”

তিনি বলেন, “এরপর সামাজিক মাধ্যমে হামলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তেজনা বাড়ে। নুর নিজেই স্থানীয়দের দ্বারা অবরুদ্ধ হন, পরে প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার হন।”

ফেসবুক স্ট্যাটাসে নুরের হুঁশিয়ারি

শুক্রবার রাতেই নিজের ফেসবুক পেজে নুর লিখেছেন, “আমখলা, বকুলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল ও ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে হাসান মামুনের লোকজন।” তিনি আরও লিখেছেন, “গণঅধিকার কর্মীদের ওপর হামলা, বাড়ি বাড়ি গুন্ডা পাঠানো হয়েছে।”

নুর বলেন, “আমরা প্রতিরোধ করতে পারি, কিন্তু এলাকার শান্তি রক্ষার জন্য ধৈর্য ধরছি। তবে ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে পরিস্থিতি করুণ হবে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “যারা রাম-রাজত্ব কায়েম করছেন, সাবধান থাকুন। আমাদেরও যথেষ্ট প্রতিরোধক্ষমতা আছে।”