লালমনিরহাট (Lalmonirhat) জেলার পাটগ্রাম উপজেলা (Patgram Upazila) শ্রমিক দলের আহ্বায়ক উমর ফারুক (Umar Faruq) বুধবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে বিষপান করেন। লাইভে তিনি বলেন, “বিএনপি করে নিজের লাইফটা শেষ করলাম।” এরপর তিনি কীটনাশক জাতীয় বিষ পান করেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
পারিবারিক উদ্যোগে হাসপাতালে ভর্তি
লাইভের সময় বিষক্রিয়ায় ছটফট করতে দেখা যায় তাকে। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (Patgram Health Complex) এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (Rangpur Medical College Hospital)-এ ভর্তি করেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি এবং তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানানো হয়েছে।
দলের প্রতি হতাশা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অভিযোগ
৮ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ফেসবুক লাইভে উমর ফারুক দাবি করেন, তিনি বহু বছর ধরে বিএনপি (BNP)’র জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। দলের জন্য নিজের মালিকানাধীন জিনিস বিক্রি করে তারেক রহমান (Tarique Rahman) ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার প্রচার চালিয়েছেন।
তবে সামান্য একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে লালমনিরহাট জেলার ‘দুলু ভাই’ ও ‘রাজিব ভাই’ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন বলে দাবি করেন তিনি। যদিও তিনি তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, তারপরও তাকে দল থেকে অবহেলার শিকার হতে হয়েছে।
সুবিধাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
উমর ফারুক অভিযোগ করেন, পাটগ্রামের কিছু সুবিধাবাদী ও সুযোগসন্ধানী নেতার কারণে তিনি দলে গুরুত্ব হারিয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজি ও দলীয় স্বার্থে কাজ না করার অভিযোগও তোলেন তিনি।
লাইভে আবেগঘন মুহূর্তে বলেন, “সকালে আমার মেয়ের এইচএসসি পরীক্ষা। জানি না সে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কি না। আমি আর বাঁচতে চাই না।” তিনি আরও বলেন, “দলের জন্য মার খেয়েছি, না খেয়ে থেকেছি, বাড়িতে থাকতে পারিনি। অথচ আজ এমন দুর্দিনে আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হলো।”
নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফোন রিসিভ না করায় তার মতামত জানা যায়নি। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান সোহেল (Waliur Rahman Sohel) কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও পাটগ্রাম-হাতিবান্ধা আসনের (Patgram-Hatibandha Constituency) সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান (Barrister Hasan Rajib Pradhan) জানান, উমর ফারুকের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। এ কারণে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পাটগ্রাম থানা (Patgram Police Station)-র অফিসার ইনচার্জ জানান, বিষয়টি তারা জেনেছেন এবং তার চিকিৎসা চলছে। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।