এমপি-মন্ত্রী-আমলাদের দুর্নীতির আড়ালে স্ত্রী ও প্রেমিকাদের ব্যবহারের চিত্র উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে

ভালোবাসা ও আস্থার সম্পর্কের আড়ালে আজ বাংলাদেশ (Bangladesh) দুর্নীতির ঘৃণ্য এক বাস্তবতায় দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) (Anti-Corruption Commission) কর্তৃক দায়ের করা মামলাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, আমলা ও প্রভাবশালী কর্মকর্তারা তাঁদের স্ত্রী ও প্রেমিকাদের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির সাম্রাজ্য।

স্ত্রী ও প্রেমিকাদের নামে অবৈধ সম্পদ ও মানিলন্ডারিং

গত ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত দুদকের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৩৩টি মামলায় ২৮টি জুটির নাম উঠে এসেছে, যাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এই মামলাগুলোতে স্ত্রী বা প্রেমিকারাই সরাসরি দুর্নীতির অর্থ লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছেন কিংবা সম্পদের মালিক হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নিছক ব্যক্তিগত দুর্নীতির বিষয় নয়, বরং একটি সাংগঠনিক ও সামাজিক দুর্নীতির চিত্র। যেখানে পরিবারের সদস্যরাও পরোক্ষভাবে এই অপরাধের সহায়তায় জড়িত। প্রমাণ সংগ্রহ কঠিন হওয়ায় এই অপরাধগুলো অধিকাংশ সময় দীর্ঘদিন আড়ালেই থেকে যায়।

আলোচিত অভিযুক্তরা

আরও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন

বিশেষজ্ঞ মতামত

টিআইবি (TIB) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান (Iftekharuzzaman) বলেন, “নারীরা অনেক সময় পরিবারিক বা সামাজিক বাস্তবতায় দুর্নীতির অংশীদার হয়ে পড়েন। আবার কেউ কেউ নিজের ইচ্ছায় দুর্নীতির অংশ বা সহযোগী হয়ে ওঠেন।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka)-এর অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক (Touhidul Haque) বলেন, “এ ধরনের দুর্নীতি জনগণের আস্থার সংকট বাড়ায়। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে অপরাধের প্রবণতা রোধ জরুরি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের মামলা ও তদন্ত দীর্ঘায়িত হলে দুর্নীতির বিচার বাধাগ্রস্ত হবে এবং ভবিষ্যতের অপরাধীদের উৎসাহিত করবে। তাই দুর্নীতির মুখোশধারী এই ‘বিশ্বস্তদের’ আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এখন সময়ের দাবি।