চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। মার্কিন ডলারে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭১ কোটি ৭২ লাখ, যা প্রতিদিন গড়ে ৯ কোটি ডলার বা এক হাজার ১০৩ কোটি টাকার সমান। বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) রোববার এক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
ব্যাংকভিত্তিক রেমিট্যান্সের পরিসংখ্যান
প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিলের ১ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৪ কোটি ডলার, একটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ডলার।
এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে এপ্রিল মাস শেষে প্রায় পৌনে তিন বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য যে, গত বছরের এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা
এর আগে, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২৯ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
তুলনামূলকভাবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৬৪ কোটি ডলার, যা তখন পর্যন্ত ছিল সর্বোচ্চ। তার আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৬০ কোটি ডলার।
সরকারের কঠোর অবস্থান এবং হুন্ডি প্রতিরোধ
বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সরকার অর্থপাচার রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে হুন্ডিসহ অবৈধ চ্যানেলের ব্যবহার কমে গেছে এবং বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্সের পরিসংখ্যান:
– জুলাই: ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার
– আগস্ট: ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার
– সেপ্টেম্বর: ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার
– অক্টোবর: ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার
– নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার
– ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার
– জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার
– ফেব্রুয়ারি: ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার
– মার্চ: ৩২৯ কোটি ডলার
এই তথ্যগুলো প্রমাণ করে যে, চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধারাবাহিক ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।