আইপিএল (IPL) শিরোপা জয় উদযাপনে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Royal Challengers Bangalore) দলের জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা ঘটে কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু (Bengaluru)–র বিখ্যাত চিন্নাস্বামি স্টেডিয়ামের (Chinnaswamy Stadium) বাইরে বুধবার (৪ জুন) বিকেলে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৪ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে এক ছয় বছর বয়সী শিশুকন্যা।
ভিড়, বিশৃঙ্খলা ও পদদলনের মর্মান্তিক দৃশ্য
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, কয়েক লক্ষ মানুষ স্টেডিয়ামের গেট নম্বর ৩–এর সামনে জড়ো হন। আরসিবি দলের আগমন প্রত্যাশায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় হুড়োহুড়ি, পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে শুরু হয় ছোটাছুটি এবং পদদলনের ঘটনা। মৃতদের মধ্যে ৭ জনকে নেওয়া হয় শিভাজিনগরের বওরিং হাসপাতাল (Shivajinagar Bowring Hospital) এবং ৩ জনকে ভৈদেহি হাসপাতাল (Vydehi Hospital)–এ।
ভিতরে চলল উৎসব, বাইরে শোক
চোখের সামনে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরও থামেনি শিরোপা উদযাপন। চিন্নাস্বামির ভেতরে চলতে থাকে অনুষ্ঠান, বাজে বেহালা, কোহলিদের উল্লাস। বিরাট কোহলি (Virat Kohli) সহ আরসিবির খেলোয়াড়রা তখনো উৎসবে মত্ত। যদিও সূত্র দাবি করেছে, তারা হয়তো ঘটনাটি জানতেন না।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমালোচনা
ভিড় নিয়ন্ত্রণে ছিল না পর্যাপ্ত প্রস্তুতি। কর্ণাটক সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৫০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার (D. K. Shivakumar) বলেন, “আমি দুঃখিত, ভিড় নিয়ন্ত্রণহীন ছিল।” দুর্ঘটনার পরও তাকে অনুষ্ঠানস্থলে কোহলিদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক।
নিরাপত্তা ব্যর্থতায় ক্ষোভ
স্টেডিয়ামে প্রবেশের জন্য টিকিটধারীদের বিশেষ পাস থাকলেও ভিড় উপচে পড়ে। লোকজনকে দেখা যায় গাছের ডালে বসে অনুষ্ঠান দেখার চেষ্টা করতে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় বিকেলের বৃষ্টিতে। স্টেডিয়ামগামী মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়, বন্ধ থাকে কুব্বন পার্ক থেকে বিধানসভা পর্যন্ত সব স্টেশন।
মানুষের জীবনের চেয়ে বড় কি উদযাপন?
সমগ্র ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে—কীভাবে এমন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পরও অনুষ্ঠান চললো নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী? কীভাবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলরা উদযাপন চালিয়ে গেলেন মানুষের মৃত্যুর করুণ আর্তনাদ উপেক্ষা করে?