বাংলাদেশ (Bangladesh)–এর সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য স্থগিত করায় ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়েছে ভারত সরকার (Indian Government) এবং নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য—আসাম (Assam), ত্রিপুরা (Tripura) ও মেঘালয় (Meghalaya)—এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সীমান্তে পণ্য আটকে থাকায় চরম আর্থিক ও মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে সীমান্ত অঞ্চল
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রয়েছে ১৩টি স্থলবন্দর এবং ৪টি জলপথ সংযোগ, যার বেশিরভাগই উত্তর-পূর্ব ভারতভিত্তিক। প্রতিবছর প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য এই পথে হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় একাধিক রপ্তানি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র আসামেই ৩৫০০ আমদানি-রপ্তানি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রায় ১০,০০০ কর্মসংস্থানের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
আত্মহত্যা, পচে যাওয়া পণ্য এবং রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
করিমগঞ্জ সীমান্ত–এ ২১ দিন আটকে থাকার পর এক ট্রাকচালক সলিমউদ্দিন আত্মহত্যা করেন। সীমান্তে আটকে থাকা হাজার হাজার ট্রাকে পচে যাচ্ছে ফল ও খাদ্যপণ্য। এই পরিস্থিতি ঘিরে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে।
চায়ের দোকান থেকে রাজনৈতিক সভা পর্যন্ত এখন একটি বাক্য ঘুরে ফিরছে:
“বাংলাদেশ আমাদের শত্রু নয়, শত্রু তারা যারা আমাদের বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়।”
রাজনৈতিক প্রার্থীরাও এখন বলছেন “বাংলাদেশপন্থী বাণিজ্যনীতি”র কথা
আসন্ন স্থানীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রার্থীরা এখন “বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট সহনশীল বাণিজ্যনীতি”র পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, দিল্লির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ রাজনৈতিকভাবে মাঠেও পৌঁছেছে।
দিল্লির কৌশল ব্যুমেরাং?
দিল্লির ধারণা ছিল, চিকিৎসা ভিসা, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ও বাণিজ্যপথ বন্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে চাপে রাখা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীন, তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান–এর সঙ্গে বিকল্প বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে।
বিশেষ করে চীন–বাংলাদেশ ইকোনমিক করিডর চালু হওয়া ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (Indian Intelligence)–কে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
মোদি নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ?
ক্রাইস্ট ইউনিভার্সিটি–র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. শিয়া উপাধ্যায় বলেন:
“বাংলাদেশকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে রাখা ভারতের স্বার্থে। চাপ নয়, দরকার সম্মান ও সংলাপ।”
এক গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে:
**“মোদি সরকারের বর্তমান বাংলাদেশ নীতি ভারতের অভ্যন্তরে নতুন সামাজিক বিদ্রোহের জন্ম দিচ্ছে।”