Friday , May 17 2024
Home / opinion / শুনবো সাইফ হয়তো নির্দোষ,সমস্ত দোষ এসে বর্তাবে মনোরজ্ঞন ও তার মেয়ের উপর:ফারুক

শুনবো সাইফ হয়তো নির্দোষ,সমস্ত দোষ এসে বর্তাবে মনোরজ্ঞন ও তার মেয়ের উপর:ফারুক

সম্প্রতি রাজধাণী ঢাকার সড়কে গাড়ি দুর্ঘটনা পা হারানো সেই বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মনোরঞ্জন হাজংয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশজুড়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যেখানে থানায় মামলা করার কথা মনোরঞ্জনের, সেখানে তার বিরুদ্ধেই উল্টো থানায় জিডি, অন্যদিকে বাবাকে হ’ত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা করতে গিয়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় মহুয়াকে। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় সড়যন্ত্র দেখছেন অনেকেই।

আর এ ব্যাপারে এবার কলামিস্ট ওয়াসিম ফারুক সবার উদ্দেশ্যে শেয়ার করেছেন কিছু কথা।

তার লেখা কলামটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

রাষ্ট্রের সব নাগরিকই আইনের কাছে সমান। আমাদের সংবিধানও নাগরিকের সে অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমাদের সংবিধান বলছে, আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকার শুধু অধিকারই নয়, মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। মৌলিক অধিকার হচ্ছে এমন অধিকার, যা রাষ্ট্র তার নাগরিকদের প্রদান করতে আইনত বাধ্য। রাষ্ট্র যে শর্তহীনভাবে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তা ২৭ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট। ২৭ অনুচ্ছেদ নাগরিকের আইনের অধিকার লাভের মৌলিক অনুচ্ছেদ, যেখানে বলা হয়েছে, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। আন্তর্জাতিক আইনেও বিষয়টি নানাভাবেই স্বীকৃত হয়েছে।

১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সর্বজনীন সনদে আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই ঘোষণা প্রদান করা হয়। ওই সনদের ৩ অনুচ্ছেদও বলছে, প্রত্যেকেরই জীবন-ধারণ, স্বাধীনতা ও ব্যক্তি নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে।

আইন ও সংবিধানে আমাদের প্রাপ্য বিভিন্ন অধিকার নিয়ে যতটুকু বলা আছে তার কিঞ্চিৎ কি আমরা ভোগ করতে পারি? আমাদের দেশে আইনের প্রয়োগ কি সবার জন্য সমান? যদি আইন তার নিজস্ব গতিতে চলতো, আইনের প্রয়োগ যদি সবার জন্যই সমান হতো তা হলে মহুয়া হাজংকে এতদিন কাঠখড় পোড়াতে হতো না মামলা করা জন্য।

মহুয়া হাজং-এর পিতা মনোরঞ্জন হাজং গাড়ি চাপায় পা হারিয়ে হাসপাতালের বিছানায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। নেত্রকোণার কলমাকান্দার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্য মনোরঞ্জন হাজং। জীবনের অনেকটা সময়ই পার করেছেন দেশের অস্তিত্ব রক্ষা জন্য। বিজিবির একজন হাবিলদার হয়ে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে জীবন জীবিকার প্রয়োজনে পরিবারকে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে রাখার জন্য চাকরি করতেন একটি বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানিতে। গত ২ ডিসেম্বর রাতে বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কে বিচারপতির রেজাউল হাসানের ছেলে সাইফ হাসানের বেপরোয়া গাড়িচাপায় আহত হন বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত এই সদস্য। সেই সময় গাড়িতে আরও ছিলেন সাইফের স্ত্রী অন্তরা আর বন্ধু রোয়াদ। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন সাইফ হাসানকে তার বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-৪৯০৬) গাড়ি এবং গাড়িতে থাকা তার স্ত্রী ও বন্ধুসহ বনানী থানায় পাঠায়। আর আহত মনোরঞ্জন হাজংকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় পঙ্গু হাসপাতালে। সেখানে ৯ দিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।

গাড়ি চাপা দেওয়ার পর সাইফ হাসানকে তার স্ত্রী ও বন্ধুসহ আটক করলেও পরে কাউকে কিছু না জানিয়ে গাড়িসহ ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর মনোরঞ্জনকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তার একটি পা কেটে ফেলেন। পঙ্গু হাসপাতালে ৯ দিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে মনোরজ্ঞন হাজং-এর দুর্ভাগ্য যে চিরজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে তাকে। মনোরঞ্জন হাজেংর মেয়ে মহুয়া হাজং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা। মনোরঞ্জন একজন সাবেক বিজিবি সদস্য ও তার মেয়ে মহুয়া একজন পুলিশ অফিসার হওয়া সত্ত্বেও সঠিক আইনের সহযোগিতা তাদের ভাগ্যে জুটেনি। বনানী থানা পুলিশ বিচারপতি পুত্র সাইফ হাসানকে থানায় নেওয়ার কিছুক্ষণের ভেতরই গাড়িসহ ছেড়ে দেন। আর মনোরঞ্জন হাজং-এর মেয়ে পুলিশ অফিসার মহুয়া হাজংকে পিতার হত্যা চেষ্টার মামলা করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়।

দীর্ঘ ১৩ দিন পর নানা সমালোচনাকে মাটি চাপা দিতে গাড়ির ধাক্কায় অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ও একজন পুলিশ অফিসারের বাবা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা নিয়েছে পুলিশ। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সবকিছু জানা, শোনার পরও প্রমাণাদি সবকিছু ঠিক থকার পরও মুহুয়া হাজং কর্তৃক দায়ের করা মামলায় আসামি হলেন অজ্ঞাতনামা।

পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়ার মামলা না নেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বিষয়টা আমাদের সদস্যের। আমাদের একটা সিনিয়র কমান্ড আছে, অথরিটি আছে, সবই আছে। আমার তো মনে হয় যে এটা গণমাধ্যমে যাওয়ার কোনো দরকার ছিল না। আমাদের সহকর্মী মহুয়ার মামলা না করতে পারার তো কোনো কারণ নেই। এটা তদন্ত হচ্ছে, তদন্তের পরেই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’ তবে আশ্চর্য করার বিষয় হলো মহুয়া হাজং-এর মামলা নেওয়ার ২ দিন আগেই তার পিতা মনোরঞ্জন হাজংয়ের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তাকে চাপা দেওয়া বিএমডব্লিউ গাড়ির সেই প্রভাবশালী চালক সাইফ হাসান। এতে দুর্ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীকেই পুরো দোষ দেওয়া হয়েছে। এমনকি এই ঘটনায় মনোরঞ্জন হাজংকে আসামি হিসেবে মামলা করা উচিত ছিল বলেও জিডিতে উল্লেখ রয়েছে।

দুর্ঘটনার পর পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে বলেও দাবি জিডি করা ব্যক্তির। সাইফ হাসান তার জিডিতে আরও অনেক বিষয় যোগ করেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের যথেষ্ট চেষ্টা করছে। হয়তো কোনো এক সময় আমরা শুনবো সাইফ হাসান হয়তো আইনের কাছে নির্দোষই থাকবে, সমস্ত দোষ এসে বর্তাবে আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করা অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মনোরজ্ঞন হাজং ও তার মেয়ে মহুয়া হাজেংর উপর। জানা গেছে, অভিযুক্তের পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার খরচসহ অন্যান্য সহায়তা করার মাধ্যমে আপসের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আপস করতে নারাজ মনোরঞ্জন হাজংয়ের পরিবার। মেয়ে মহুয়া নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পার করছেন তার বর্তমান সময়। একদিকে কর্মক্ষেত্রের চাপ অপরদিকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বাবার সু-চিকিৎসা। মহুয়া তারপরও মামলা করতে পেরেছেন।

মহুয়ার এজাহারে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর ৯৮ ধারায় বেপরোয়া গতি ও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাড়ি চালানোর অপরাধে চালকের অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর ১০৫ ধারায় দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বা কেউ মারা গেলে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে। জানি না মহুয়ার এত ত্যাগের ফসলের বিচার কি পাবেন মহুয়া ও তার পরিবার?

মনোরঞ্জন হাজং কখনোই আর সুস্থ জীবনে ফিরতে পারবেন না। আমাদের এই আবেগ হয়তো তার জন্য সাময়িক, তবে তার পঙ্গুত্ব আজীবনের। মনোরঞ্জন তার পা ফিরে না পেলেও আইনের মাধ্যমে পা হারানোর সুষ্ঠু বিচার পাবেন এটা তো প্রত্যাশা করতে পারি!

এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে বাবার সঙ্গে হাসপাতালেই রাত কাটছে সার্জেন্ট মহুয়া হাজাংয়ের। একদিকে যেমন নিজের দায়িত্ব পালন করছেন, অন্যদিকে অসুস্থ বাবার দেখা-শোনাও করে যাচ্ছেন তিনি। এই মুহুর্তে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মনোরঞ্জন হাজং। তার সুস্থতার জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

About

Check Also

কৃষি ব্যাঙ্ক খালি হচ্ছে, জানি না আপনি এই ব্যাপার এ অবগত আছেন কিনা: আব্দুন নূর তুষার

বর্তমান সময়ে দেশে এক শ্রেনীর বালু খাদকের নাম শোনা যায়। এরা নিজেদের লাভের স্বার্থে ফসলি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

uzaki-chan wa asobitai hentai hentaicity.org hentai dickgirl سكس مصرى نار جديد freetube18x.com الاباحية الحرة start up ph october 4 2022 teleseryena.com david licauco maria clara download porn videos indian creampieporntrends.com myhotmasala tamil office sex videos pimpmpegs.info home sexy video pirnstar hugevids.mobi x videos hd صور حب سكسي porndot.info سكس فلاحات مصريات tamilaunt pornvideox.mobi indian hindi xnxx heroines sex pornmovstube.net hiroen sex @monashiman javmobile.mobi saegusa chitose massage beeg pakistanixxxx.com sex videos x videos xvideo favroite list indian indianxtubes.com www xnxxx sex video com rape sex video in india makato.mobi desi.sex sexy picture dikhaiye video tubefury.mobi anty nude video please be careful with my heart episodes teleseryeepisodes.com 2good 2 be true