Sunday , May 19 2024
Home / Crime / বন্ধুর সার্টিফিকেট ব্যবহারের মাধ্যমে দশ বছর ধরে চাকরী করার পর যেভাবে উদঘাটিত হলো প্রকৃত রহস্য

বন্ধুর সার্টিফিকেট ব্যবহারের মাধ্যমে দশ বছর ধরে চাকরী করার পর যেভাবে উদঘাটিত হলো প্রকৃত রহস্য

‘মাসুম খান’ নামের এক ব্যাক্তি দশ বছর যাবত বন্ধুর সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ছদ্মবেশে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছিলেন। বায়োডাটায় নিজের ছবি ছাড়া নাম, বাবার নাম, ঠিকানা, সার্টিফিকেট সবই ব্যবহার করেছেন বন্ধুর। শুধু তাই নয়, ২০১৭ সালের জানুয়ারী থেকে সাড়ে চার বছর পপুলার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীতে চাকরিরতও ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে কোম্পানিটির একটি প্রতারণার মামলার তদন্তে পিবিআইর কাছে প্রতারণার রহস্য ফাঁস হয়ে যায়।

পিবিআই জানতে পারে, ওই ব্যক্তির প্রকৃত নাম মোহাম্মদ সুজন। আর প্রকৃত মাসুম খান চাকরি করছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে। অবশ্য এ রহস্য উদ্ঘাটনে পিবিআইকে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়।

পিবিআই জানায়, কথিত মাসুম খান (সুজন) সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩ জুলাই পর্যন্ত পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানিতে সিনিয়র ইনফরমেশন অফিসার পদে চাকরি করেছেন। হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। পরে বিভিন্ন মার্কেটিং এক্সিকিউটিভদের কাছ থেকে ৭ লাখ ৭২ হাজার ১৯৪ টাকা নির্ধারিত ডিপোতে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এরপর ওই বছরের ১৫ জুলাই মাসুম খান তাঁর আপন ভাই সুবিন ইসলামকে নিয়ে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালের ধানমন্ডি অফিসে যান। সেখানে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে তারা লিখিত দিয়ে আসেন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবেন। সুবিন ইসলাম এ টাকার জিম্মাদার হন। পরে যথাসময়ে টাকা পরিশোধ না করলে পপুলারের পক্ষ থেকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সেই নোটিশের কোনো উত্তর না পাওয়ায় ২১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ আজাদ হোসেন এ ব্যাপারে ঢাকা চিফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১৫ এ আত্মসাৎ ও প্রতারণার একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই ঢাকা মেট্রোকে (উত্তর) নির্দেশ দেন। জানা গেছে, তিনি এর আগেও অন্য প্রতিষ্ঠানে ছদ্মবেশে চাকরি করেছেন।

পিবিআই প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলমের তদারকিতে পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা উক্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত কর্মকর্তা মামলায় দেওয়া আসামির ঠিকানা অনুযায়ী রংপুর সদরের পূর্ব খলেয়া গ্রামে যান। সেই গ্রামের মো. মনসুরুল হক খানের ছেলে মাসুম খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে জানতে পারেন, তিনি (মাসুম খান) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে চাকরি করছেন। পপুলারে দেওয়া বায়োডাটা এবং সব কাগজপত্রের মিল থাকলেও মাসুম খানের ছবির সঙ্গে লাইব্রেরিয়ান মাসুম খানের চেহারার মিল নেই। এ অবস্থায় তদন্ত কর্মকর্তা প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। ছবি দেখালেও লাইব্রেরিয়ান মাসুম খান সেই ছদ্মবেশী মাসুম খানকে না চেনার ভান করেন। কিন্তু তদন্ত থেমে থাকেনি। পিবিআইর নানামুখী তদন্তে বেরিয়ে আসে ছদ্মবেশী মাসুম খান লাইব্রেরিয়ান মাসুম খানের নাম, বাবা-মায়ের নাম, জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, সার্টিফিকেট সবই ব্যবহার করেছেন। শুধু সঠিকভাবে নিজের ছবিটি ব্যবহার করেছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, ‘তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের তথ্যও ছিল ভুয়া। পরে ওই এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে তার ছবি দেখিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করি। একপর্যায়ে রংপুর কোতোয়ালি থানার হরিদেবপুর ইউনিয়নের একজন ইউপি সদস্য ছবি দেখে তাকে চিনতে পারেন। তিনি জানান, তার নাম মো. সুজন (৩৮)। তার বাবার নাম আব্দুস সাত্তার ও মায়ের নাম ইসমোতারা বেগম। পরে তদন্ত কর্মকর্তা তার বাড়িতে গেলে বাবা-মাও ছবি দেখে সুজনকে শনাক্ত করেন। তবে তারা তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হননি। জুয়েল মিয়া জানান, সুজন মাসুম খানের এসএসসি, এইচএসসি ও অনার্সের সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র ব্যবহার করে চাকরি করেছেন।’

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘পরে মাসুম খান জানান, একসময় তারা রংপুর সদরে একটি মেসে থাকতেন। এ সময় তার অগোচরে তার সার্টিফিকেটসহ সব কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে ঢাকায় এসে হয়তো চাকরি করছে সুজন। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে আমরা জানতে পারি পপুলারে জিম্মাদার হওয়া সুবিন ইসলামের পরিচয়ও ভুয়া। এ নামে সুজনের কোনো বড় ভাই নেই।’

শনিবার বিকালে মাসুম খানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে চাননি। তিনি দাবি করেন, ‘একসঙ্গে থাকার সুবাদে তার সার্টিফিকেট, কাগজপত্র ফটোকপি করে নিয়েছেন সুজন। সুজন তার বন্ধু হলেও তদন্তসংশ্লিষ্টদের কাছে তিনি তার পরিচয় গোপন করেন কেন, এ প্রশ্ন এড়িয়ে মাসুম খান বলেন, ‘আমি এখন মসজিদে নামাজে ঢুকব, আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সুজনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ঠিক নয়। সে ঢাকায় গেছে, বিষয়টি আপস করতে।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, মাসুম খান ছদ্মবেশী মোহাম্মদ সুজন বলেন, ‘তিনি বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছেন।’ অন্যের সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করলেন কেন এবং তার প্রকৃত শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান সুজন।

এই প্রতারণার বিষয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যাল ছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করে এসেছেন মোহাম্মদ সুজন যার মধ্যে আছে অপসোনিনে মেডিক্যাল প্রোমোশন অফিসার পদের চাকরিও। এছাড়াও তিনি জানান, কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রার (সিআর) কেইস বা নালিশী মামলা হওয়ায় অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলেও আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

About Ibrahim Hassan

Check Also

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বিসিবি পরিচালক

আলোচনা যেন থামছেই না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নিয়ে। তবে এবারের আলোচনাটা ভিন্ন। জানা গেছে বাংলাদেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

uzaki-chan wa asobitai hentai hentaicity.org hentai dickgirl سكس مصرى نار جديد freetube18x.com الاباحية الحرة start up ph october 4 2022 teleseryena.com david licauco maria clara download porn videos indian creampieporntrends.com myhotmasala tamil office sex videos pimpmpegs.info home sexy video pirnstar hugevids.mobi x videos hd صور حب سكسي porndot.info سكس فلاحات مصريات tamilaunt pornvideox.mobi indian hindi xnxx heroines sex pornmovstube.net hiroen sex @monashiman javmobile.mobi saegusa chitose massage beeg pakistanixxxx.com sex videos x videos xvideo favroite list indian indianxtubes.com www xnxxx sex video com rape sex video in india makato.mobi desi.sex sexy picture dikhaiye video tubefury.mobi anty nude video please be careful with my heart episodes teleseryeepisodes.com 2good 2 be true